চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা: শিবগঞ্জের সুবিধা ভোগী ও মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে সহজ সরল শতাধিক মহিলার সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুইজন মহিলা বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে জেলার শিবগঞ্জের মোবারকপুর ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের মুস্তারী ও কানসাট পুখুরিয়া এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে পাখি খাতুন নামের দুই মহিলা মাধ্যমে। সরজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে মোবারকপুর ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের মৃত মজলুর রহমানের স্ত্রী মুস্তারী বেগম এলাকার শতাধিক মহিলাকে সুবিধা ভোগীর ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ছয় হাজার করে টাকা করে নিয়ে দীর্ঘদিন পরও সুবিধা ভোগীর কোন কার্ড না পাওয়া তারা তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকী দিচ্ছে।
দক্ষিণশিকারপুর গ্রামের রহিমা বেগম(৬২) জানান তিন বছর আগে মুস্তারী বেগম আমার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ছয় হাজার টাকা নিয়েছে। অনেক ঘুরা ঘুরি করেও কার্ড ও টাকা কোনটাই পাইনি।
একই ধরনের অভিযোগ করেন শিকারপুর ও দক্ষিণ শিকারপুর গ্রামের ও রাঘবপুর গ্রামের মারজিনা বেগম, জুলেখা বেগম,নেকজান বিবি হোহরুল আমিন , নজরুল ইসলাম, চাইনা বেগম,ঘিটু, রোকিয়া সহ প্রায় ৫০/৬০জন নারী পুরুষ জানান জানান আমাদের নিকট হতে প্রায় তিন বছর আগে জন প্রতি ছয় হাজার টাকা করে নিয়ে সুবিধাভোগীর কার্ড করে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করছে। তাদের ভাষ্য মতে আমাদের মত শুধু সুবিধাভোগীর কার্ড করে দেয়ার করে কথা বলে প্রায় ১শ জনের নিকট হতে প্রায় ছয় লাখ টাকা নিয়েছে।
আমরা এখন টাকা ফেরত চাইলে উল্টো আমাদের নানা ধরনের হুমকী দিচ্ছে। শুধু তাই নয় ওই মহিলা একই এলাকার প্রায় ৩০/ ৪০ জনের নিকট হতে মাতৃত্বকালীন ভাতা করে দেয়া কথা বলে জন প্রতি ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। সরেজমিনে গেলে দক্ষিণ শিকার গ্রামের আলতামাসের মেয়ে আশিয়া বেগম জানান প্রায় ছয় মাস আগে আমাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা করে দেয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে।তার পর প্রায় ঘুরাঘুরি করেও ভাতাও চালু হয়নি, এমনকি টাকাও ফেরত দেয়নি। শুধু আশিয়াই নয় একই এলাকার পপিয়ারা বেগম, কেমিয়ারা বেগম টকিয়ারা বেগম সেমি বেগম প্রায় ৩০ জনের মহিলার একই অভিযোগ।
সুত্রমতে মুস্তারী বেগম কানসাট এলাকার পাখি নামে একটি কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে যোগসাজজ করে সহজ সরল মহিলাদের নিকট হতে লাখ লাখ টাকা দিয়ে দুই জনে আত্মসাত করেছে। উল্লেখ্য যে পাখি উপজেলা বিভিন্ন আফিসে দালালী করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া তিনি একজন সাংস্কৃতিক কর্মী বলে দাবী করেন। সুত্রটি আরো জানায় তাদের মাধ্যমে অবৈধভাবে কয়েকটি সুবিধা ভোগীর কার্ড হলেও পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে বাতিল করা হয়েছে।
এব্যাপারে মুস্তারী বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম: টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করলে পরে তিনি শিকার করেন যে ভুক্তভোগীদের টাকা কানসাটের পাখিকে দেয়া হয়েছে এবং তার মাধ্যমে কার্ড করে নিব। তবে পাখির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ সরাসরি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি মুস্তারী বেগমকে ব্যবিÍগত ভাবে চিনি তবে তারে সাথে আমরা কোন ধরনে টাকা লেনদেন নেই । কোন দিনই ছিলনা । তিনি আরো বলেন আমি কোন দিনই উপজেলার কোন অফিসের দালালী করিনি এবং এখনো করিনা।
একজন শিক্ষার্থী। সুবিধাভোগী কার্ডের ব্যাপারে শিবগঞ্জ ্ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাস বলেন মুস্তারী বেগম ও পাখি সমাজ সেবা অফিস বা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের কেউ নয়। তাদের কথা মত আমার অফিস থেকে কোন ধরনের সুবিধা ভোগীদের কার্ড করে দেয়া হয় না। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংশ্ল্ষ্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ্ মেম্বারদের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে সুবিধাভোগীদের কার্ড দেয়া হয়।তিনি আরো বলেন এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে এদের বিরুদ্ধে আইননুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।পেলে অন্যদিকে মাতৃত্বকালীন ভাতার ক্ষেত্রে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার সুমাইয়া আখতার বলেন আমার জানা মতে উক্ত দুই জন মহিলাকে আমি চিনি না।
তাদের সাথে কোন কথা হয়নি। আমার অফিসে কোন দালালদের স্থান নেই। তিনি আরো বলেন মাতৃত্বকালীন ভাতার ক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে তালিকা নিয়ে যাচাইবাছাই করে অনলাইন করা হয়।এখানে দালালদের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতার দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।
তিনি আরো বলেন দালাল সম্পর্কে কঠোর নজরদারী রেখেছি। যদি ্কেউ এদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয় তবে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।